অন্তবর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে কূটনীতিকরা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
জি এম ফরহাদুল:
অন্তবর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে কূটনীতিকরা। সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আয়োজিত ব্রিফিংয়ে বিদেশি কূটনীতিকরা এই মনোভাব ব্যক্ত করেন বলে সাংবাদিকদের জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বাইরের কোন দেশের নিয়ন্ত্রণে নেই, দেশের জন্যই কাজ করছে সরকার। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা পর্যন্ত এই সরকার কাজ করবে।
কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূতদের ডাকা হয় এ সরকারের উদ্দেশ্য গুলো জানাতে। এই উপদেষ্টা পরিষদের উদ্দেশ্যগুলো বিদেশি কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়েছি আমরা। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।মানবাধিকার নিয়ে কথা বলা হয়েছে।আমাদের উপদেষ্টা পরিষদে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনের লোক আছে, তাদের জানানো হয়েছে। অর্থনীতি, বিনিয়োগ, ব্যবসাবাণিজ্যসহ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বর্তমান পরিষদের মেয়াদকাল সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই পরিষদের মূল লক্ষই দেশকে গুছিয়ে নির্বাচন করে গনতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। পরিবর্তন পর্যন্ত এ সরকার থাকবে। সেক্ষেত্রে আপাতত কোনো সময়সীমা বলা যাচ্ছে না। অন্তত আরো মাসখানেক তো লাগবেই এ বিষয়ে কথা বলতে।
তিনি জানান, তরুনদের সংসদে চেয়েছে কূটনৈতিকরা। তারা বলছেন, তরুণরা অনেক বড় একটা কাজ করেছে, আগামীতে যে নির্বাচন হবে, সেখানেও যেন তরুনদের প্রতিনিধি থাকে। আমরা বলেছি, আমাদের উপদেষ্টা পরিষদে তরুনদের দুজন প্রতিনিধি রয়েছে। তরুনরা অনেক বড় অবদান রেখেছে, তাদের কিছু চাহিদাও রয়েছে। সেগুলো প্রাধান্য পাবে।
উপদেষ্টা বলেন, আজকের বৈঠকে বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলা হয়েছে। সাময়িক সমস্যাকে গুরুত্ব না দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে দেশের সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়ার আহবাণ জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলাপ হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,বাংলাদেশ বাইরের কারো নিয়ন্ত্রণে নেই। অন্তবর্তীকালীন সরকার কারো জন্য নয়। কেউ অন্য কারো জন্য কোনো দেশের জন্য কাজ করছে না। আমরা সবাই দেশের জন্যই কাজ করছি। বৈঠকে আমরা জানিয়েছি, কোন ধরনের নৈরাজ্যকারী, বিশৃঙ্খলাকারীকে ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূতরা তরুনদের প্রসংশা করেছেন আগামী নির্বাচনেও তরুণদের গুরুত্ব দেয়ার আহবান জানান। পরিবর্তনের জন্য আন্দোলনকারীদের চাওয়া অনুযায়ী মানবাধিকার রক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন। রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশ সরকার যেসব কমিটমেন্ট করেছে, সেগুলো অব্যাহত থাকবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
শেখ হাসিনা ভারতে থাকলে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একজন মানুষ একটি দেশে থাকলে সেটাতে ঐ দেশের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হবে কেন? দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনেক বড় এবং বিস্তৃত বিষয়।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় এবং ভারত থেকে যেসব প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে এই ক্ষেত্রে বর্তমান পরিষদের দৃষ্টিভঙ্গি কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রোপাগান্ডা সরকার কখনো করে না।আমরাও করবো না। এক্ষেত্রে আপনাদের (মিডিয়া) ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। এসময় প্রোপাগাণ্ডার বিরুদ্ধে দেশের মিডিয়া গুলোকে সক্রিয় ভূমিকার আহবান জানান।