অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর শনিবার শ্রীলঙ্কায় প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর শ্রীলঙ্কায় আগামী ২১ সেপ্টেম্বর, শনিবার প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কলম্বো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। মন্দার কারণে ২০২২ সালে হাজার হাজার মানুষ সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাকসের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়লে, তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন এবং পরবর্তীতে বিক্রমাসিংহে ক্ষমতায় বসেন।
অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা এবং কয়েক মাসের খাদ্য, জ্বালানী ও ওষুধের ঘাটতির অবসান ঘটাতে কৃতিত্বের দাবিদার বিক্রমাসিংহে এখন নতুনভাবে ম্যান্ডেট চাইছেন। বিক্রমাসিংহে ২০২২ সালের সরকারের খেলাপি হওয়ার পর চীনসহ দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতাদের সাথে শ্রীলঙ্কার ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বিদেশী ঋণ পুনর্গঠনে সাফল্যের জন্য আলোচনায় রয়েছেন। কিন্তু তার কর বৃদ্ধি ও উদার ইউটিলিটি ভর্তুকি প্রত্যাহার করে সরকারের হিসেবের ভারসাম্য বজায় রাখার নীতি জনগণের কাছে চরমভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
প্রচারের শেষ দিনগুলোতে বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘সেই সময়ের কথা ভাবুন যখন সমস্ত আশা হারিয়ে গিয়েছিল। আমাদের কাছে খাবার, গ্যাস, ওষুধ ছিল না। বা কোন প্রকার আশা ছিল না।’ এখন আপনার কাছে একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ এসেছে, আপনারা সন্ত্রাসের সময়ে ফিরে যেতে চান নাকি অগ্রগতিতে যেতে চান।’ তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে ৪৬-বিলিয়ন বিদেশী ঋণের অর্থ পরিশোধের পাশাপাশি ২০২২ সালের সরকারি খেলাপি হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি এখনও দুর্বল। বিক্রমাসিংহে বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাবেন। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ এই সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে বলেছে, ‘বিক্রমাসিংহের সরকার কীভাবে অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করেছে এবং পরবর্তী পরিমিত পুনরুদ্ধার করেছেন- এই নির্বাচনে মূলত তা নিয়ে একটি গণভোট হবে। তবে এতে আরো বলা হয়, ভর্তূকি প্রত্যাহার এবং জনসাধারণের কাছে অন্যায্য হিসেবে বিবেচিত বিভিন্ন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় অনেক নাগরিক একই সময়ে প্রচুর কষ্ট ভোগ করছেন।’
বিক্রমাসিংহে অনুরা কুমারা দিসানায়াকাসহ দুজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হবেন। এক সময়ের প্রান্তিক মার্কসবাদী দলনেতা ছিলেন দিসানায়াকা। সহিংস অতীতের কারণে তিনি নিন্দিত হয়েছেন। তার দল ১৯৭০ ও ১৯৮০ এর দশকে দুটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়। যার ফলে ৮০,০০০ এরও বেশি লোক নিহত হয়। গত সংসদ নির্বাচনে দলটি চার শতাংশেরও কম ভোট জিতে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার সংকট দিসানায়াকার জন্য একটি সুযোগ প্রমাণ করেছে, দ্বীপের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করার প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে তিনি সমর্থনের ঢেউ দেখছেন। বিক্রমাসিংহের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী নেতা সজিথ প্রেমাদাসা। তিনি দেশটিতে কয়েক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধ চলাকালে ১৯৯৩ সালে নিহত সাবেক প্রেসিডেন্ট রানাসিংহ প্রেমাদাসার ছেলে।