আওয়ামীপন্থী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কক্ষ দখলের অভিযোগ

Aug 12, 2024 - 19:05
আওয়ামীপন্থী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কক্ষ দখলের অভিযোগ

জাতীয় হৃদেরাগ ইনস্টিটিউট হাসপাতাল 
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ’র) সভাকক্ষ দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির আওয়ামীপন্থী চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত ডা. ফাহদিয়া আফরোজ ঝুমার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় হাসপাতালটির সাধারণ চিকিৎসকদের মধ্যে ব্যপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। ডা. ফাহদিয়ার জন্য হাসপতালের মধ্য ব্লকের ২১৩ নম্বর কক্ষটি বরাদ্দ রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ কক্ষটি ব্যবহার করেছেন। কিন্তু গত ৭ আগস্ট অফিস সময়ে না এসে বিকালে হাসপাতালের প্রশাসনের অগোচরে হাসপাতালের মধ্য ব্লকের ২১৫ নম্বর কক্ষটি দখলে নেন। নিজের ফাইলপত্র ও মালামাল রেখে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেন।
এছাড়াও ডা. ফাহদিয়ার বিরুদ্ধে চিকিৎসক এবং কর্মচারীদের হয়রানি, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা নিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিধিবর্হিভূতভাবে দখলকৃত কক্ষটি উদ্ধারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছেন সাধারণ চিকিৎসকেরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডা. ফাহদিয়া আফরোজ ঝুমা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইসিভিডি) কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সদ্য সাবেক আরপি (রেসিডেন্ট ফিজিশিয়ান্স)। তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) অনুসারী। তার স্বামী ডা. শাহ গোলাম নবী তুহিন স্বাচিপের কেন্দ্রীয় নেতা ও জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডা. ফাহদিয়ার জন্য হাসপতালের মধ্য ব্লকের ২১৩ নম্বর কক্ষটি বরাদ্দ রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কক্ষটি ব্যবহার করেছেন।
তার আগে হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন ও অধ্যাপক ডা. সাবিনা হাশেমের নামে বরাদ্দ ছিল। কিন্তু গত ৭ আগস্ট অফিস সময়ে না এসে বিকালে প্রশাসনের অগোচরে হাসপাতালের মধ্য ব্লকের ২১৫ নম্বর কক্ষটি দখলে নেন। নিজের ফাইলপত্র ও মালামাল রেখে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক জানান, এনআইসিভিডি’র ২১৫ নম্বর কক্ষটি আগে ভিভিআইপি কেবিন ছিল। সম্প্রতি হাসপাতাল বর্ধিতকরণ হলে কর্তৃপক্ষ এই কক্ষটিকে সিসিইউ’র (করোনারি কেয়ার ইউনিট) সভাকক্ষ হিসেবে ব্যবহারের জন্য নির্ধারণ করে। কিন্তু ডা. ফাহদিয়ার নামে কক্ষটি বরাদ্দ না থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে দখল করে নেন। অথচ নিজস্ব কক্ষ সংকটে হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক রোগীদের সেবাদানে ভোগান্তিতে পড়ছেন। উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন ও চিকিৎসা গবেষণা কাজে মনযোগ দিতে পারছে না। চিকিৎসকরা আরও অভিযোগ করেন, ডা. ফাহদিয়ার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে চিকিৎসক এবং কর্মচারীদের হয়রানি, দূর্ব্যবহার করতেন। যথাসময়ে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতেন না। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা নিতেন। কিন্তু তিনি নিজে স্থানীয় এবং তার স্বামী স্বাচিপের কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ বিষয়ে উপ পরিচালক ডা. মামুনুর রশীদ ট্রাইবুনালকে বলেন, বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) পরিচালক (অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন) আমাকে ডেকে দায়িত্ব দেয় রিপোর্ট দেওয়ার জন্য।  আমি ২১৫ নম্বর কক্ষে গিয়ে দেখি তালা দেওয়া, এ রিপোর্ট আমি দিয়েছি পরিচালকের কাছে। তবে কক্ষ দখলের বিষয় জানতে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন ও অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. ফাহদিয়া আফরোজ ঝুমার মুঠোফোনে গত দুইদিন একাধিক কল দিলেও তারা রিসিভ করেননি। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা ও কল দেওয়ার পরও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।