কন্যা সন্তান জন্ম দিলেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ রাব্বির স্ত্রী

Dec 12, 2024 - 19:56
কন্যা সন্তান জন্ম দিলেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ রাব্বির স্ত্রী

ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত মাগুরা জেলা ছাত্রদলের নেতা শহীদ মেহেদী হাসান রাব্বির স্ত্রী রুমি খাতুন।  গতকাল বুধবার রাত এগারোটার দিকে শহরের বেসরকারি একটি প্রাইভেট হাসপাতালে তিনি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। নবজাতকের আগমনে শহীদ পরিবারে আনন্দের পরিবর্তে এখন বিষাদের ছায়া। কারণ নিজ সন্তানকে দেখে যেতে পারেননি শহীদ রাব্বি। 

উল্লেখ্য. গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কে গুলিতে প্রাণ যায় জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বির (৩৪)। তিনি মাগুরা সদর উপজেলার বরুণাতৈল গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। নিহত রাব্বির ভাই ইউনুস আলী জানান, রাব্বির স্ত্রী রুমি খাতুন সন্তানসম্ভবা ছিলেন। বুধবার রাতে ঘর আলো করে কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছেন তার ভাইয়ের স্ত্রী।

আফসোস মেয়েকে দেখে যেতে পারল না ভাই। সন্তানও কোনোদিন দেখতে পারবে না বাবাকে। নবজাতক ও তার মা সুস্থ রয়েছে। শহীদ রাব্বির সন্তান, স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি।  জানা গেছে, ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পাশে ঢাকা রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেয় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। 

এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান। তাঁকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

হাসপাতালের পরিচালক মহসিন উদ্দিন বলেন, ওই দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আহত অবস্থায় ২৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেহেদী হাসান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন মারা যান। মেহেদী হাসান রাব্বির বুকে ও ফরহাদ হোসেনের মাথায় গুলির আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। দুজনই একই এলাকায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।

এ ঘটনায় নিহত মেহেদীর ভাই ইউনুস আলী বাদী হয়ে মাগুরার সাবেক দুই সংসদ সদস্য (এমপি) সাইফুজ্জামান শিখর ও বীরেন শিকদারসহ ১৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে রাব্বির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।