চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতে চায়
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশে সোলার প্যানেলে বিনিয়োগ করতে চায় এবং বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার মাধ্যমে কৌশলগত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে আগ্রহী। নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে বলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বানে সাড়া দিয়ে চীনা সোলার প্যানেল প্রস্তুতকারকরা বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনে আগ্রহী। চীনা সরকার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। গত মাসে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি চীনের সোলার প্যানেল প্রস্তুতকারকদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে সোলার প্যানেলে চীনা বিনিয়োগ এলে সেটি আমাদের বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মাইলফলক হবে। সাক্ষাৎকালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অধ্যাপক ইউনূসকে ‘চীনের জনগনের পুরোনো বন্ধু’ উল্লেখ করেন এবং তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধ থাকবে উল্লেখ করে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা পূর্ণ আস্থা রাখি যে আপনি দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবেন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানান, বেইজিং দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব বাড়াতে উৎসাহিত করবে। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় গুরুতর আহত ছাত্র-জনতাকে চিকিৎসা দিতে চীনের রেড ক্রস চিকিৎসকদের একটি টিম ঢাকায় পাঠিয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন বাংলাদেশ থেকে আরও বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাবে। অধ্যাাপক ইউনূস এই আন্তরিকতার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি চীনের লাখ লাখ মানুষকে টদারিদ্র অবস্থা থেকে বের করে আনার অদম্য প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
ড. ইউনূস বলেন, চীনের সোলার কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বড় আকারে বিনিযোগ করতে পারে, যা অনেক ধনী দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারমূলক বাজার প্রবেশাধিকারের সুবিধা পাবে। তিনি আরও বলেন, সোলার কোম্পানি ছাড়াও অন্যান্য চীনা প্রস্তুকারকরা তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা চীনের সাথে আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ‘নতুন অধ্যায়’ সূচনার আহ্বান জানান। তিনি দুই দেশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চীনা কোম্পানিগুলোর সাথে সহযোগিতা করতে চাই। আমাদের একসাথে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।’