চীনা বিজ্ঞানীদের তিন লাখ বছরের পুরনো মানব ফসিল আবিস্কার

Dec 8, 2024 - 19:16
চীনা বিজ্ঞানীদের তিন লাখ বছরের পুরনো মানব ফসিল আবিস্কার

চীনা বিজ্ঞানীরা তিন লক্ষ বছরের পুরনো মানব ফসিল আবিস্কার করেছে। সে সময়ের মানুষেরা বিবর্তনের মাধ্যমে পরবর্তীতে হোমোসেপিয়ানদের রূপ পায়। এরপর হোমোসেপিয়ানদের অর্জন আধুনিক সব মানুষ ধারন করে। তারা পুর্ব চীনের আনহুই প্রদেশের ডংঝি কাউন্টি’র হুয়ালংডং সাইটে মানব ফসিলের সাথে অন্যান্য প্রানীর হাড়গোড় এবং বেশ কিছু পাথরের তৈরি যন্ত্রপাতিও উম্মোচন করেছে।  চীনা গবেষকরা ডংঝিতে শুক্রবার থেকে  থেকে রোববার পর্যন্ত  অনুষ্ঠিত এক একাডেমিক সম্মেলনে হুয়ালংডং সাইটের এই আবিস্কারের কথা তুলে ধরেছে।

দেশি-বিদেশি প্রায় ১০০ বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও বিজ্ঞানী ঐ একাডেমিক সম্মেলনে অংশগ্রহন করে।  ১৯৮৮ সালে হুয়ালংডং সাইটের আবিস্কার। খনন শুরু ২০১৩ সালে। এরপর হুয়ালংডং সাইট থেকে সম্পূর্ন মাথার খুলিসহ প্রায় বিশটি মানুষের ফসিল, চার শতাধিক  পাথরের তৈরি শিল্পকর্ম, অনেকগুলো হাড়ের অংশ- যা কাটাকাটিতে ব্যবহৃত হত এবং ৮০টির বেশি মেরুদন্ডী প্রানীর ফসিল আবিস্কৃত হয়েছে। 

চলতি বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের একটা দল সাইটটির ৪০ বর্গমিটার এলাকায় নতুনভাবে খোঁড়াখুড়ি করে। তারা ১১ টি মানব ফসিল, ভালভাবে সনাক্তযোগ্য পায়ের পাতার হাড়, উরুর একটা হাড়ের অংশ, একটা ভাঙ্গা হাড়, এবং আটটা মাথার খুলির অংশ বিশেষ আবিস্কার করে। চীনের একাডেমি অব সায়েন্সের জীবাশ্ম বিজ্ঞানী ও খননকারী দলের প্রধান উ শিউজি বলেন, এই আবিস্কারগুলোর আলোকে ধারনা করা যায় যে, ঐ সাইটটিতে এক সময় ২০ জনের বেশি মানুষের একটা বড় পরিবার বাস করত।  ওখানে তাদের একটা ডাইনিং হল ছিল, যেখানে তারা খাদ্য প্রক্রিয়াকরনের কাজে কাটাকাটিও করত।

রাতের বেলা বন্যপ্রানীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ওখানে একটা গর্তের মত ছিল যেটাকে তাদের বেডরুম বলা যেতে পারে। যা এখন ধ্বংস প্রায়। উ শিউজি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে অনুসন্ধান খননে আরো ফসিল এই সাইট থেকে আবিস্কৃত হতে পারে।’ তিনি বলছেন, ২০১৫ সালে হুয়ালংডং সাইটে একটা মাথার খুলির ফসিল পাওয়া যায়। যেটাকে গবেষকরা একটা ১৩ থেকে ১৪ বছরের মেয়ের মাথা বলে মনে করেছেন। মেয়েটির মাথার ওই খুলিটিতে অতীত এবং বর্তমান মানুষের  মধ্যেকার এক অসাধারন ঐক্যতান খুঁজে পাওয়া যায়।

মুখের গঠনটা আগের দিনের মানুষের বিবর্তনের মাধ্যমে আধুনিক মানুষ হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দেয়। বলে সমতল মুখের কথা, চোখের হাই সকেট, সরু মাথার খুলি এবং মাড়ির কথা। আর এসবই বলে আমাদের চিবুকের বিকাশের কথা। মেয়েটি দেখতে আমাদের মতই ছিল কিছু প্রাচীন চিহ্ন বাদে।