জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম দিনের নায়ক জর্জি ও স্টাবস
বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনই জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটার টনি ডি জর্জি ও ট্রিস্টান স্টাবস। দুই ব্যাটারের সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন শেষে ৮১ ওভারে ২ উইকেটে ৩০৭ রান করেছে প্রোটিয়ারা। স্টাবস ১০৬ রানে আউট হলেও ১৪১ রানে অপরাজিত আছেন জর্জি। বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম ১১০ রানে ২ উইকেট নেন। আলো-স্বল্পতার কারনে নির্ধারিত ৯ ওভার বাকী থাকতে প্রথম দিনের খেলা শেষ হয়।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটি সপ্তম ওভারেই ভাঙতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ পেসার হাসান মাহমুদের বলে দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার জর্জির ক্যাচ ধরতে পারেননি অভিষিক্ত উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। তখন জর্জির নামের পাশে ছিল ৬ রান।
জীবন পেয়ে অধিনায়ক আইডেন মার্করামকে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০৩ বলে ৬৯ রানের সূচনা এনে দেন জর্জি। ইনিংসের ১৮তম ওভারে স্পিনার তাইজুল ইসলামের হাত ধরে প্রথম সাফল্য পায় বাংলাদেশ। উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে তুলে মারতে গিয়ে মিড অনে মোমিনুল হকের সহজ ক্যাচে সাজঘরে ফিরেন ২টি চারে ৫৫ বলে ৩৩ রান করা মার্করাম।
এরপর তিন নম্বরে নামা স্টাবসকে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন জর্জি। এতে প্রথম সেশনেই ১’শ রান স্পর্শ করে প্রোটিয়ারা। ১ উইকেটে ১০৯ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় সফরকারীরা। বিরতি পর ফিরেই টেস্টে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান জর্জি। অন্যপ্রান্তে অঙ্কনের ভুলে ব্যক্তিগত ২৫ রানে জীবন পান স্টাবস। তাইজুলের ঝুলিয়ে দেওয়া বলে ব্যাট লাগাতে পারেননি স্টাবস। তখন ক্রিজ থেকে বাইরে ছিলো স্টাবসের পা। এ অবস্থায় বল গ্লাভসে নিতে না পারায় স্টাবসকে স্টাম্পিং করার সহজ সুযোগ হারান অঙ্কন। জীবন পেয়ে বাংলাদেশী বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান স্টাবস।
দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম ম্যাচে এসে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ নেন জর্জি। ৫৫তম ওভারে স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের বলে সুইপ শটে চার মেরে তিন অংকে পা রাখেন তিনি। জর্জির ১৪৬ বলে সেঞ্চুরি ও স্টাবসের হাফ-সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় সেশনটিও নিজেদের করে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। চা-বিরতি পর্যন্ত ৫৬ ওভারে ১ উইকেটে ২০৫ রান করেছিলো প্রোটিয়ারা।
তৃতীয় সেশনের শুরুতে ব্যক্তিগত ১০৭ রানে রান আউটের হাত থেকে রক্ষা পান জর্জি। এ অবস্থায় ক্যারিয়ারের পঞ্চম টেস্টে প্রথম শতকের স্বাদ নেন ১৯৫ বল খেলা স্টাবস। ২০১৯ সালের পর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে একই টেস্টে দুই ব্যাটার সেঞ্চুরির নজির গড়লেন। এর আগে বিশাখাপত্তমে ভারতের বিপক্ষে ডিন এলগার ১৬০ ও কুইন্টন ডি কক ১১১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি স্টাবস। তাইজুলের বলে উইকেট থেকে সরে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৯৮ বলে ১০৬ রান করেন স্টাবস। দ্বিতীয় উইকেটে জর্জির সাথে ৩৪২ বলে ২০১ রানের জুটি গড়েন স্টাবস। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে এটিই চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের জুটি। এশিয়ার মাটিতে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ রান।
স্টাবস ফেরার পর ডেভিড বেডিংহামকে নিয়ে দিনের খেলা বাকী সময় পার করেছেন জর্জি। ১০টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২১১ বল খেলে ১৪১ রানে অপরাজিত আছেন জর্জি। অন্যপ্রান্তে ২টি ছক্কায় ১৮ রানে অপরাজিত বেডিংহাম।
তাইজুল ১১০ রানে ২ উইকেট নেন। বাংলাদেশের অন্য চার বোলার হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, মিরাজ ও মোমিনুল হক ছিলেন উইকেটশুন্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : দক্ষিণ আফ্রিকা : ৩০৭/২, ৮১ ওভার (জর্জি ১৪১*, স্টাবস ১০৬, তাইজুল ২/১১০)।