তাসকিনের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের পরও হারের মুখে বাংলাদেশ

Nov 26, 2024 - 19:19
তাসকিনের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের পরও হারের মুখে বাংলাদেশ

পেসার তাসকিন আহমেদের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে হারের মুখে ছিটকে পড়েছে সফরকারী বাংলাদেশ। টেস্ট জয়ের জন্য ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিন আরও ২২৫ রান করতে হবে টাইগারদের। কিন্তু হাতে আছে মাত্র ৩ উইকেট।

দ্বিতীয় ইনিংসে তাসকিনের বোলিং তোপে ১৫২ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এতে জয়ের জন্য ৩৩৪ রানের টার্গেট পায় বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে চতুর্থ দিন শেষে ৭ উইকেটে ১০৯ রান করেছে টাইগাররা। তাসকিন বল হাতে টেস্টে প্রথমবারের মত ইনিংসে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নেন। ৬৪ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন তাসকিন।

এন্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শেষে ৯ উইকেটে ২৬৯ রান করেছিলো বাংলাদেশ। চতুর্থ দিন আর ব্যাটিংয়ে না নেমে ইনিংস ঘোষণা করে টাইগাররা। প্রথম ইনিংস থেকে পাওয়া ১৮১ রানের লিডকে সাথে নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ২৫ রানের সূচনা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পঞ্চম ওভারে তাসকিনের বলে উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে ৮ রানে আউট হন মিখাইল লুইস।

১১তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন তাসকিন। তৃতীয় স্লিপে মাহমুদুল হাসানের ক্যাচে ৩ রানে বিদায় নিশ্চিত হয় কেসি কার্টির। তাসকিনের সাথে উইকেট শিকারের তালিকায় নাম তুলেন আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম। ১২তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে ২৩ রানে সাজঘরে ফেরত পাঠান শরিফুল। এবারও স্লিপে ক্যাচ নেন মাহমুদুল।

৩৯ রানে ৩ উইকেট পতনের পর জুটিতে ৫০ রান যোগ করেন কাভেম হজ ও আলিক আথানাজে। হজকে লিটনের ক্যাচে পরিণত করে বাংলাদেশকে ব্রে-থ্রু এনে দেন তাসকিন। ১৫ রানে বিদায় নেন হজ। হজের মত উইকেটে সেট হয়ে সাজঘরে ফিরেন আথানাজে। বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের বলে লেগ বিফোর হন ৭টি চারে ৪২ রান করা আথানাজে।

প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান জাস্টিন গ্রেভসকে ২ রানে বোল্ড করেন নিজের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন তাসকিন। ৯৫ রানে ষষ্ঠ ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উইকেট পতন ঠেকিয়ে ২৪ বলে ২৯ রানের জুটি গড়েন উইকেটক্ষক জশুয়া ডা সিলভা ও আলজারি জোসেফ। সিলভাকে ২২ রানে তাইজুল এবং আলজারিকে ১৭ রানে আউট করেন মিরাজ।

কামার জোসেফকে ৪ রানে বোল্ড করে ১৬ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত ইনিংসে ৫ উইকেট নেন তাসকিন। শেষ ব্যাটার রোচকে ১২ রানে থামিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস ১৫২ রানে গুটিয়ে দেন তাসকিন। ১৪.১ ওভার বল করে ৬৪ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট নেন তাসকিন। মিরাজের শিকার ছিলো ২টি। ৩৩৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার রোচের তোপের মুখে পড়ে ২৩ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার জাকির হাসানকে শূন্যতে, দু’বার জীবন পাওয়া মোমিনুল হককে ১১ ও শাহাদাত হোসেনকে ৪ রানে শিকার করেন রোচ। আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়কে ৬ রানে থামান সিলেস।

পঞ্চম উইকেটে ৩২ বলে ৩৬ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন মিডল অর্ডারে লিটন দাস ও অধিনায়ক মিরাজ। লিটনকে ২২ রানে আউট করে জুটি ভাঙ্গেন শামার। ষষ্ঠ উইকেটে জাকের আলিকে নিয়ে ৪৩ রানের জুটিতে বাংলাদেশের রান ১শ পার করেন মিরাজ। কিন্তু দিনের শেষভাগে পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট নিয়ে

বাংলাদেশকে হারের মুখে ঠেলে দেন সিলেস। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৬ বলে ৪৫ রান করা মিরাজকে এবং ৪ রান করা তাইজুলকে শিকার করেন সিলেস। আলোকস্বল্পতায় আগেভাগেই শেষ হয় দিনের খেলা। জাকের ১৫ ও হাসান শূন্যতে অপরাজিত আছেন। রোচ ও সিলেস ৩টি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : (টস-বাংলাদেশ)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস : ১৪৪.১ ওভারে ৪৫০/৯ ডি. (গ্রেভস ১১৫*, লুইস ৯৭, আথানেজ ৯০, হাসান ৩/৮৭, তাসকিন ২/৭৬, মিরাজ ২/৯৯)।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৯৮ ওভারে ২৬৯/৯ ডি. (জাকের ৫৩, মোমিনুল ৫০, লিটন ৪০, আলজারি ৩/৬৯)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস : ৪৬.১ ওভারে ১৫২/১০ (আথানাজে ৪২, ব্র্যাথওয়েট ২৩, তাসকিন ৬/৬৪, মিরাজ ২/৩১)।

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৩১ ওভারে ১০৯/৭ (মিরাজ ৪৫, লিটন ২২, রোচ ৩/২০)।