প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থান ধরে রাখলো লিভারপুল; জয় পেল আর্সেনাল ও সিটি
ক্রিস্টাল প্যালেসকে ১-০ গোলে পরাজিত করে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে লিভারপুল। দিনের অপম ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আর্সেনাল ও ম্যানচেস্টার সিটি। ফুলহ্যামকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে লিভারপুলের থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিটি। সাউদাম্পটনকে ৩-১ গোলে হারানো আর্সেনালও সিটির সমান ১৭ পয়েন্ট সংগ্রহ করে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে।
আর্নে স্লটের অধীনে এনিয়ে লিভারপুল লিগের প্রথম ১০ ম্যাচের নয়টিতেই জয়ী হলো। ৯ মিনিটে কোডি গাকপোর ক্রস থেকে দিয়োগো জোতা লিভারপুলকে এগিয়ে দেন। এরপর পর্তুগীজ এই তারকা দুটি বড় সুযোগ নষ্ট করে লিভারপুলের লিড বাড়াতে ব্যর্থ হন। এই গোল আর পুরো ম্যাচে শোধ করতে পারেনি প্যালেস। কিন্তু ম্যাচ শেষের ১১ মিনিট আগে গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকার হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়লে লিভারপুলের জয় কিছুটা হলেও ম্লান হয়ে যায়।
ম্যাচ শেষে স্লট বলেছেন, ‘দ্বিতীয় গোল করতে পারলে মানসিক ভাবে তাদের ভেঙ্গে দেয়া যেত। যদিও সব সমর্থকই এই ফলাফল মেনে নিয়েছে। তারপরও আমার কাছে মনে হয় ম্যাচে যেহেতু আমরাই দাপট দেখিয়েছি, তাই ব্যবধানটা আরো বড় হওয়া উচিৎ ছিল।’
আগের ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজিকে হারানোর পর আত্মবিশ্বাসী আর্সেনাল কাল দারুন ফুরফুরে মেজাজেই মাঠে নেমেছিল। সাত ম্যাচে এখনো জয়বিহীন সাউদাম্পটন এমিরেটস স্টেডিয়ামে কিছু একটা করে দেখানোর লক্ষ্যস্থির করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিটে ক্যামেরুন আর্চারের গোলে এগিয়ে যায় সেইন্টসরা। গ্রীষ্মে এ্যাস্টন ভিলা থেকে আসার পর সাউদাম্পটনের জার্সিতে এটাই আর্চারের প্রথম গোল। যদিও এই লিড বেশীক্ষন ধরে রাখতে পারেনি সফরকারীরা। ঘরের মাঠে টানা সপ্তম গোলে কেই হাভার্টজ আর্সেনালকে সমতায় ফেরান। ৬০ মিনিটে মাঠে নামার আট মিনিটের মধ্যে গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি বুকায়ো সাকার ক্রস থেকে গানার্সদের এগিয়ে দেন। প্রথম দুই গোলের যোগানদাতা সাকা ম্যাচ শেষের দুই মিনিট আগে নিজেই স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন।
আর্সেনাল ম্যানেজার মিকেল আর্তেতা সাকা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘তার মধ্যে ম্যাচের গতি পরিবর্তনের ক্ষমতা আছে। শীর্ষে থাকতে হলে কিছু কিছু খেলোয়াড়কে সেই মুহূর্ত তৈরী করতে হয়। আজ সাকা সেটাই করে দেখিয়েছে।’ হাঁটুর গুরুতর ইনজুরির কারনে রড্রির মৌসুমের শেষ পর্যন্ত অনুপস্থিতি, সিটির টানা পঞ্চম লিগ শিরোপা জয়ে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু স্প্যানিয়ার্ড তারকার পরিবর্তে কাল মাতেও কোভাচিচ হয়ে উঠেছিলেন সিটির ত্রাতা। তার দুই গোলেই ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যাচের ভাগ্য ঘুড়ে যায়।
রাউল জিমিনেজের এ্যাসিস্টে আন্দ্রেস পেরেইরা দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ফুলহ্যামকে এগিয়ে দেন। সিটি বস পেপ গার্দিওলা বলেছেন, ‘কখনো কখনো আমি প্রতিপক্ষকে কৃতিত্ব দিতে পছন্দ করি। প্রথম গোলের পিছনে জিমিনেজের যে অসাধারণ অবদান ছিল তা ভোলার নয়।’ ৩২ মিনিটে কোভাচিচের ডিফ্লেকটেড শটে সিটি সমতায় ফিরে। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর দুই মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে কোভাচিচ দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন। ৮২ মিনিটে জেরেমি ডকু বক্সের বাইরে থেকে কোনাকুনি শটে সিটিকে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। ৮৮ মিনিটে রডরিগো মুনিজ ফুলহ্যামকে আশা জাগিয়ে তুলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কটেজার্সদের বিরুদ্ধে টানা ১৭তম জয় নিশ্চিত করে সিটি মাঠ ছাড়ে।
প্রিমিয়ার লিগে নতুন খেলতে আসা ইপসউইচকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে এবারের মৌসুমে ঘরের মাঠে টানা তৃতীয় পরাজয় থেকে ওয়েস্ট হ্যাম রেহাই পেয়েছে। এর মাধ্যমে নতুন বস জুলেন লোপেতেগুইয়ের উপর চাপও কমেছে। হ্যামার্সদের হয়ে গোল করেছেন মিখায়েল এন্টোনিও, মোহাম্মদ কুদুস, জেরোড বোয়েন ও লুকাস পাকুয়েটা। ২২ বছরের মধ্যে প্রিমিয়ার লিগে প্রথম জয়ের অপেক্ষা আরো বাড়লো ইপসুইচের। গুডিসন পার্কে এন্থনি গর্ডনের পেনাল্টি সেভে এভারটনের সাথে গোলশুন্য ড্র করেছে নিউক্যাসল। বিরতির আগে ছয় গোলের ম্যাচে বেন্টফোর্ড ৫-৩ গোলে উল্ফসকে পরাজিত করেছে।