বৈষম্যমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়তে চাই সকলের সহযোগিতা

Aug 19, 2024 - 21:20
বৈষম্যমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়তে চাই সকলের সহযোগিতা

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, তিন পার্বত্য জেলার জনগোষ্ঠীকে এর আগে পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। এই সরকার দেশের জনগণকে কোনোভাবেই পিছিয়ে রাখবে না।

আজ সোমবার রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স ভবনের অডিটোরিয়ামে বান্দরবান পার্বত্য অঞ্চলের সরকারি বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সুধীজন, ছাত্র-শিক্ষক প্রতিনিধি, বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপদেষ্টাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাতে এলে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আমি চাই, যারা সবজায়গায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায় না, সেসব পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কিছু একটা করব। আমরা বৈষম্যমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়তে চাই-আর এজন্য দরকার সকলের সহযোগিতা।

উপদেষ্টা আরও বলেন, পাংখোয়া, মার্মা, খুমী, খেয়াং, বম, চাক্, ম্রো, তঞ্চংগা, লুসাই, ত্রিপুরা, চাকমা সব সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে গুরুত্ব বিবেচনা করে তাদেরকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। বৈষম্যমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়তে কাউকে পিছনে রাখা হবে না বলে আশ্বাস দেন তিনি।

এ সময় উপদেষ্টাকে কাছে পেয়ে তাদের প্রয়োজনের কথা জানাতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন বান্দরবানের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বাসীন্দারা। তারা পার্বত্য এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা দেশ বিদেশের কুটনীতিকদের কাছে একটি মডেল বাংলাদেশ পুননির্মাণে সহযোগিতা ও সমর্থন চেয়েছেন। আমরা সে লক্ষ্যে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করবো।

তিনি বলেন, আমরা গুড গভর্ন্যান্স গড়ে তুলবো। আমরা পার্বত্য তিন জেলা পরিষদগুলোকে পুনর্গঠন করবো। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার আগে প্রথমেই শিক্ষক নিয়োগে আমাদের কঠোর হতে হবে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম ও পার্বত্য চট্টগ্রামকে আধুনিক শিক্ষা নগরীতে গড়ে তোলা হবে। উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে কোনো প্রকার দুর্ণীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। সবজায়গাতেই সংস্কার করা হবে। পার্বত্য এলাকায় খেলাধুলার আগ্রহ বাড়াতে সেখানে ফুটবলের মাঠ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।

তিনি আরও বলেন, সকলকে আইন-শৃ্ঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আমাদের ভয় নেই, আমাদের পাশে বীর ছাত্র-জনতা রয়েছে। তিনি বলেন, আমি ১৯৭১ সালের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও সম্ভ্র্রম হারা মা-বোনসহ ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে স্বৈরাচারী সরকার পতনে শহীদ হওয়া সেই সব বীর ছাত্র এবং নিরীহ মানুষদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। সভায় সকলেই যার যার ক্ষেত্র থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাকে সহায়তা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

আলোচনা সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কংকন চাকমা, ইউএনডিপি’র কর্মকর্তা এ এ মং, রুমা উপজেলার লেলুং খুশী, থানচির ছাত্র প্রতিনিধি উকিংওয়ং মার্মা, লামা’র মাং ইয়ং ম্রো, চাক্ এর অংজাইঐই, বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের নির্বাহী সদস্য খুই সিং প্রু লুবু, বান্দরবান সদরের সুকান্ত ত্রিপুরা, রাজুময় তঞ্চংগা, উমংসিং খেয়াং, জেনী বম, লাল জারলম বম, বরেন বম, উখিংনু চাক, থানচি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ক্যহলাচিং মার্মা, রোয়াংছড়ি উপজেলার নুএসিং মারমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।