ব্রাজিলের আখ ক্ষেতগুলোতে ছড়িয়েছে দাবানল
ব্রাজিলে উচ্চ তাপমাত্রা ও শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যে সাও পাউলু রাজ্যের আখ ক্ষেতগুলোতে ব্যাপক দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলের ৩৬টি শহরে ‘উচ্চ সতর্কাবস্থা’ জারি করেছে রাজ্য কর্তৃপক্ষ।
শনিবার আখ ক্ষেতগুলোতে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর দ্রুতই আশেপাশের শহরগুলোতে ঘন ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে খোলা মাঠে সব ধরনের খেলাধুলা নিষিদ্ধ করেছেন কর্মকর্তারা।
এই নিষেধাজ্ঞার কারণে সাও পাউলুর পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হিবেইরো প্রেতোতে ব্রাজিলীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের একটি ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে।
ধোঁয়ার কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় রাজ্যের কয়েকটি মহাসড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ক্ষেতের মধ্যে প্রবল তাপে ও ধোঁয়ার দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হওয়া গবাদিপশুর মৃতদেহ দেখানো হয়েছে।
নিজের ক্ষেতে দাঁড়িয়ে কৃষক সিউভিও দেন্তাস (৫৬) রয়টার্সকে বলেন, “দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। আমরা কিছুই করতে পারছি না। আগুনে গাছপালা পুড়ে গেছে, ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে আর গবাদি পশু মারা গেছে। চোখের সামনে সব কিছু পুড়ে যাচ্ছে, এগুলো খুবই বেদনাদায়ক।”
সাও পাউলু রাজ্য সরকার বলেছে, শুষ্ক মৌসুমে মাঠ শুকিয়ে যাওয়া এবং তাপমাত্রা বেশি থাকায় দাবালন ছড়িয়ে পড়েছে। দাবানলের কারণে ৩৬টি শহরে 'উচ্চ সতর্কাবস্থা' জারি করা হয়েছে।
সাও পাউলুর গভর্নর তারসিজিও জে ফ্রেইতাস বলেন, “দমকল বিভাগের বিমানের পাশাপাশি পানি ছিটানোর জন্য আমরা অতিরিক্ত বিমান ভাড়াও করেছি।”
পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি টাস্কফোর্স গঠন করেছেন তিনি।
শুক্রবার হিবেইরো প্রেতো শহরের নিকটবর্তী উরুপেসে একটি চিনি কলে ছড়িয়ে পড়া আগুন নেভানোর চেষ্টার সময় দুই দমকলকর্মী মারা যান। এই এলাকায় ২০০ হেক্টর আখ ক্ষেত পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে।
বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম চিনি, জ্বালানি ও ইথানল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রাইজেন জানিয়েছে, আখ ক্ষেতে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার কারণে বৃহস্পতিবার থেকে সেরতাওজিনোতে তাদের একটি কারখানার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
শুক্রবার ব্রাজিলের বৃহত্তম শহর সাও পাউলুর আকাশ কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে গেলেও শনিবার অনেকটা পরিষ্কার হয়েছিল।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ব্রাজিলে দাবানলের মৌসুম সাধারণত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। এ বছর মে মাসের শেষের দিকে বিশ্বের বৃহত্তম জলাভূমি প্যান্তেনাওয়ে অস্বাভাবিকভাবে দাবানল শুরু হয়, অন্যদিকে জুলাই মাসে আমাজন রেইন ফরেস্টে আগুনের সংখ্যা দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছায়।