মুন্সীগঞ্জে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা!
মো.ফরহাদ,মুন্সীগঞ্জ :
"সড়কে নেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ। এই অবস্থায় মুন্সীগঞ্জ শহরের সড়কে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় রয়েছেন শিক্ষার্থী ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। প্রখর রোদে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের প্রতিনিধিরা । এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ময়লা পরিষ্কার করতেও দেখা যায় তাদের।
বৃহস্পতিবার (৮আগস্ট) সকাল থেকেই মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপার মার্কেট, কাচারি চত্বর, শহরের অদূরে সিপাহীপাড়া এলাকায় শিক্ষার্থীদের প্রখর রোদের মধ্যে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। ছাতাবিহীন পিঠে জাতীয় পতাকা বেঁধে কোনো সুরক্ষা ছাড়াই সড়কের মধ্যে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেন তারা। শিক্ষার্থীরা ছাড়াও কিছু ব্যবসায়ীদেরও স্বেচ্ছায় এ দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকাল ৮টার দিকে শহর পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশগ্রহণ করেন। ময়লা পরিষ্কারের পর একটি টিম নিজ বাড়িতে ফিরে যায়। অপর একটি টিম মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপার মার্কেট, কাচারি চত্বর শহরের অদূরে সিপাহী পাড়ায় ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করেন। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তারা এই দায়িত্ব পালন করেন বলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান। এভাবে তারা সারাদিন শিফট করে এ দায়িত্ব পালন করেন।
এ সময় দেখা যায়, প্রখর রোদে বেশ কিছু পানির বোতল সুপার মার্কেটের ভাস্কর্যের উপরে রাখেন শিক্ষার্থীরা। একটু পরপরই তারা পানি খেয়ে নিচ্ছেন আর দায়িত্ব পালন করছেন। নিয়ম মেনেই সড়কে গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে চালকদের। কোনোরকম ছাড় দিচ্ছেন না তারা। দুই দিন পরে মুন্সীগঞ্জ শহরের রাস্তায় বিপুল সংখ্যক গাড়ির দেখা মিলেছে। তবে রাস্তায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক থাকায় অন্যদিনের মতো যানজট নেই সড়কে। শিক্ষার্থীরা রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে দুটি গাড়ির লাইন তৈরি করে রাখেন সড়কে।
এ ব্যাপারে সরকারি হরগঙ্গা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আল-আমিন বলেন, 'যতদিন না ট্রাফিক পুলিশ আসে আমরা রাস্তায় থাকবো। সিগন্যালের পাশাপাশি গাড়িগুলো যেন লাইন ধরে চলে সেটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আমাদের কষ্ট হচ্ছে, ভালো লাগছে মানুষকে সচেতন করা যাচ্ছে। অভিজ্ঞতাও হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের এই ভূমিকায় খুশি পথচারী ও গণপরিবহনের চালকরা। তারা জানান, পুলিশ নেই কিন্ত সড়কে বিশৃঙ্খলা নেই। শিক্ষার্থীরা কাজ করে যাচ্ছে। খুব বেশি যানজট তৈরি হচ্ছে না।
শিক্ষার্থীদের কর্মতৎপরতার বিষয়ে পথচারী মমতাজ চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্রদের আত্মত্যাগ আমাদের নতুন করে বাঁচার শক্তি জুগিয়েছে। তাদের এসব কাজ দেখে আমি তাদের সালাম জানাই। এতে প্রতিটি মানুষের মধ্যে নতুন করে দেশ নির্মাণের প্রেরণা সৃষ্টি হচ্ছে।"