"রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ইনস্টিটিউট উদ্বোধন: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ"

Sep 17, 2024 - 20:23
"রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ইনস্টিটিউট উদ্বোধন: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ"

রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট উদ্বোধন করলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আজ মঙ্গলবার রাজশাহী জেলার রাজপাড়া থানার তেরখাদিয়ায় তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট উদ্বোধন করেন।

মালিক ও শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিবৃন্দ, দেশি-বিদেশি উন্নয়ন অংশীজন, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দও সেসময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. আবদুর রহিম খান।  দেশের সামগ্রিক পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার উন্নতি বিধানকল্পে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা মোতাবেক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও গবেষণা পরিচালনা করার লক্ষ্যে ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট’ দক্ষিণ এশিয়ায় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত লাভ করবে। 

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান, সেনা কল্যাণ সংস্থা’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. হাবিব উল্লাহ, আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পুটিআইনেন; বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট’এর হেড অফ প্রধান মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া প্রমুখ। আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, কর্মক্ষেত্রে পেশাগত স্বাস্থ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রায়ই শুনি বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে দুর্ঘটনার ফলে শ্রমিকরা আহত হচ্ছে, নিহত হচ্ছে। তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে আমরা এইসব দুর্ঘটনাকে সম্পূর্ণরূপে রোধ করতে পারছি না।
তিনি বলেন, আমরা দায়িত্বভার নেওয়ার পরেই রানা প্লাজা ও তাজরীন  ফ্যাশনের হতাহতদের সাথে বসেছি, আলাপ-আলোচনা করেছি এবং  হতাহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছি। 

উপদেষ্টা আরো বলেন, ৭ কোটি ৩০ লক্ষ শ্রমিক প্রতিদিন লড়াই করে যাচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য। প্রোডাক্টিভিটি বাড়িয়ে সমৃদ্ধির পথকে ত্বরান্বিত করতে হলে মালিক-শ্রমিককে 'কালেক্টিভ অ্যাপ্রোচে' কাজ করতে হবে। আমাদের কাগজে-কলমে অনেক নিয়ম আছে কিন্তু তার বাস্তবায়ন নেই। বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে দেশ নিশ্চিতভাবে উন্নতি করতে পারবে। এই নবনির্মিত ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে শ্রমিকদের মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসবে  এবং শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। আমাদের সহযোগী দেশ এবং ডেভেলপমেন্ট পার্টনাররা তাদের সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখবে বলে আশা ব্যক্ত করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব  এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, আমাদের শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ জোর দিতে হবে। আমরা আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে কাজ করার চেষ্টা করছি। বিদ্যমান শ্রম আইনকে সংস্কার করা নিয়ে এ সরকার কাজ করবে। অনুষ্ঠানের সভাপতি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো আবদুর রহিম খান বলেন, “দেশে শিল্প বিকাশের ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশির পেশাগত দুর্ঘটনা, স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা ঝুঁকির মতো সমস্যাও সৃষ্টি হয়েছে। এই সমস্যা নিরসনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে এই ইনস্টিটিউট। দেশের শিল্পখাতে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি শ্রম অধিকার রক্ষা ও উন্নত কর্মপরিবেশ বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠানটি ভূমিকা রাখবে। ফলে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশিয় পণ্যের ব্র্যান্ডিং ইমেজ বৃদ্ধি সহজতর হবে।”

আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পুটিআইনেন বলেন, “আমরা আশা করি শ্রমিক, ব্যবস্থাপক, ও নীতিনির্ধারকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি এই প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানটি  শ্রমমান বিষয়ক জ্ঞান বিকাশ ও প্রসারের জন্য একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমাদৃত হবে। আন্তর্জাতিক শ্রমমানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নিরাপদ কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি তৈরির মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক নতুন প্রজন্মের বিষেশজ্ঞদের গড়ে তুলতে বিশেষ অবদান রাখবে।