রেকর্ড গড়া জয়ে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো শ্রীলংকা
রেকর্ড গড়া জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো স্বাগতিক শ্রীলংকা। দুই স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়া ও নিশান পেইরিসের ঘূর্নিতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের চতুর্থ দিনে শ্রীলংকা ইনিংস ও ১৫৪ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। ইনিংস বিবেচনায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এটি সবচেয়ে বড় জয় লংকানদের। এছাড়া প্রায় ৬ বছর পর টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জা পেল নিউজিল্যান্ড। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নভেম্বরে দুবাইয়ে পাকিস্তানের কাছে ইনিংস ও ১৬ রানে হেরেছিল ব্ল্যাক ক্যাপসরা।
গল টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ম্যাচ জয়ের সুবাস পাচ্ছিলো শ্রীলংকা। জয় থেকে ৫ উইকেট দূরে ছিলো লংকানরা। প্রথম ইনিংসে ৫১৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে ১৯৯ রান করেছিলো নিউজিল্যান্ড। ইনিংস হার এড়াতে আরও ৩১৫ রান করতে হতো কিউইদের।
আজ চতুর্থ দিনের শুরুতেই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ৪৭ রান নিয়ে খেলতে নামা টম ব্লান্ডেল। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে স্পিনার পেইরিসের শিকার হন ব্লান্ডেল। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৪ বলে ৬০ রান করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ষষ্ঠ উইকেটে গ্লেন ফিলিপসের সাথে ৯৫ রানের জুটি গড়েন ব্লান্ডেল। এরপর নতুন ব্যাটার মিচেল স্যান্টনারকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আগের দিন ৩২ রানে শেষ করা ফিলিপস। টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেওয়ার পর পেইরিসের শিকার হন তিনি। ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৮ রান করেন ফিলিপস।
দলীয় ২৮০ রানে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে ফিলিপস ফেরার পর লোয়ার-অর্ডারদের নিয়ে নিউজিল্যান্ডের হারের ব্যবধান কমান স্যান্টনার। অধিনায়ক টিম সাউদিকে ১০ ও আজাজ প্যাটেলকে ২২ রানে শিকার করে শ্রীলংকাকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান জয়সুরিয়া। শেষ ব্যাটার হিসেবে স্যান্টনারকে থামিয়ে নিউজিল্যান্ডকে ৩৬০ রানে গুটিয়ে দেন পেইরিস। ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৭ রান করেন স্যান্টনার। এই ইনিংসে ১৭০ রানে ৬ উইকেট নেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা পেইরিস। ১৩৯ রানে ৩ উইকেট নেন জয়সুরিয়া। প্রথম ইনিংসে পেইরিস ৩টি ও জয়সুরিয়া ৬ উইকেট নিয়েছিলেন।
১৮ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা খেলোয়াড় হন জয়সুরিয়া। প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ১৮২ রানের কল্যাণে ম্যাচ সেরা হন কামিন্দু মেন্ডিস। সিরিজের প্রথম টেস্ট ৬৩ রানে জিতেছিলো শ্রীলংকা। ফলে দুই ম্যাচের সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে ২-০ ব্যবধানে হারালো লংকানরা। এর আগে ২০০৯ সালে ঘরের মাঠে কিইউদের হোয়াইটওয়াশ করেছিলো শ্রীলংকা। এ বছর আট ম্যাচে এটি ষষ্ঠ জয় শ্রীলংকার। ২০০৬ সালের পর আবারও এক বছরে ছয় টেস্ট জিতলো তারা।
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ আট ম্যাচ জয়ের রেকর্ড আছে শ্রীলংকার। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট জয়ে বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে তৃতীয় স্থান ধরে রাখলো শ্রীলংকা। ৯ ম্যাচে ৫টি জয় ও ৪টি হারে ৫৫.৫৬ শতাংশ পয়েন্ট আছে লংকানদের। এ ম্যাচ হেরে চতুর্থ স্থান থেকে সপ্তম স্থানে নেমে গেল নিউজিল্যান্ড। ৮ ম্যাচে ৩ জয় ও ৫ হারে ৩৭.৫০ শতাংশ পয়েন্ট আছে কিউইদের। তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারত (৭১.৬৭)। দ্বিতীয় স্থানে অস্ট্রেলিয়া (৬২.৫০) এবং পঞ্চম স্থানে আছে বাংলাদেশ (৩৯.২৯)।