লেবানন-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি কার্যকর শুরু
অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্টি এবং ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি আলোর মুখ দেখছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আদ্যপান্ত তুলে ধরেন। দুই নেতার ঘোষণায় বলা হয়েছে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে কার্যকর শুরু হবে। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে এক বছরের ও বেশি সময়ের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান হতে যাচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বক্তব্য দেয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিয়েছে। তিনি জোরালো কন্ঠে বলেছেন, ‘এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি হবে স্থায়ী।’ বাইডেন আরো বলেছেন, লন্ডনের স্থানীয় সময় বুধবার ভোর ৪টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর শুরু হবে।
স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে আজ এই কথা বলা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘তিনটি কারণে যুদ্ধ বিরতি চুক্তির এটাই উপযুক্ত সময়।’ কারণ গুলো হচ্ছে: একদিকে ইরানের হুমকি,ইসরাইলি বাহিনীর নতুন করে হামলা এবং হামাস যোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করা। তিনি বলেছেন,‘এই চুক্তিকে স্থায়ীভাবে রুপ দিতে আমরা লেবানন এবং ইসরাইলকে সহযোগিতা করবো ।’
বাইডেন বলেছেন, যুদ্ধ বিরতি চুক্তির মাধ্যমে ইসরাইল-লেবানন সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান হবে। হিজবুল্লাহ বা অন্য কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন কি হারালো না হারালো তা ভেবে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিবে এমন কিছু কোনো পক্ষকেই করতে হবে না। আমরা সবকিছু কড়া নজরদারিতে রাখবো।
মার্কিন নেতা বলেছেন, ‘আগামী ৬০ দিনের মধ্যে লেবাননের সেনাবাহিনী এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী সদস্যরা তাদের এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিবে।’ তবে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর অবকাঠামো পূনর্নিমাণ করতে দেয়া হবে না। বাইডেন আরো বলেছেন, ‘একইভাবে ইসরাইলও আগামী ৬০ দিনের মধ্যে লেবানন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাদের সব সৈন্য প্রত্যাহার করে নিবে।’
এদিকে মধ্যপ্রাচ্য বিষযক এক বিশ্লেষক বলেছেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি লেবাননে আনন্দেও বন্যা বয়ে গেলেও ইসরাইলরা চুক্তি নিয়ে এখনো সংশয় প্রকাশ করছে। কারণ, ইসরাইলের একটি নিউজ চ্যানেল পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে মাত্র ৩৭ শতাংশ ইসরাইলি চুক্তির পক্ষে মত দিয়েছে। যদিও এক বছরেরও বেশি সময়ের সংঘাতে লেবাননের ১২ লক্ষেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের সিনিয়র এক কর্মকর্তা বলেছেন, হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে চুক্তি যাতে লঙ্ঘন না হয় সেই লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র লেবাননী সেনাবাহিনীর সাথে কাজ করবে। তবে কোনো মার্কিন সৈন্য এই অঞ্চলে মোতায়েন হবে না।
এদিকে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর যুদ্ধ বিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট ও এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘এই চুক্তি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ কারণ, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ইসরাইল টিভি নেটওয়ার্ক চ্যানেল-১২ এই খবর জানায়। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নকবি বলেছেন এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক।