‘১৫ বছর যারা তান্ডব চালিয়েছে তাদের বিচার করা হবে’

Nov 30, 2024 - 18:56
‘১৫ বছর যারা তান্ডব চালিয়েছে তাদের বিচার করা হবে’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলছেন, যারা আমাদের ওপর ফ্যাসিবাদের ডালপালা বিস্তার করেছিলেন, এক নাগাড়ে ১৫ বছর যারা তান্ডব চালিয়ে ছিলেন, যারা খুন গুম চালিয়েছিলেন, দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছেন, আমরা তাদের ক্ষমা করবো না। তাদের প্রত্যেকের বিচার করা হবে।

তিনি আরো বলেন, বিশেষভাবে স্মরণ করছি ২৪ এর স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী যারা তাদের মূল্যবান জীবন বাজি রেখেছেন। এই সংগ্রামে ও আন্দোলনে গণঅভ্যূত্থান এবং বিপ্লবে আপনারাও লড়াই করেছেন। আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের সন্তানেরা একটি বৈষম্যহীন সমাজের জন্য গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। আমরাও সেই বৈষম্যহীন দেশ গড়ে তুলতে চাই। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় যশোরের চাঁচড়ায়, ঝিকরগাছা ও নাভারণ সাতক্ষীরা মোড়ে তিনটি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

জামায়াত আমির বলেন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে জাতপাত দল ধর্মের ব্যবধান থাকবে না। সমস্ত মানুষ তার সকল বৈধ অধিকার ভোগ করবে। শ্রমিক তার অধিকার ভোগ করবে। কৃষক তার অধিকার পাবে। সে তার ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবে। আবার অফিস আদালত কোর্ট কাচারিতে যারা কাজ করেন, তারা জনগণের আমানতের ব্যাপারে আল্লাকে ভয় করবেন। অফিস আদালতে কোন ঘুষ দুর্নীতি থাকবে না ইনশাআল্লাহ।

ডা. শফিকুর রহমান উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের এই যুদ্ধে নির্দিষ্ট কোন দল কোন ধর্ম এবং কোন লিঙ্গের মানুষেরা যুদ্ধ করেনি। কোলের শিশুরা শহীদ হয়েছে। বৃদ্ধরা শাহাদাত বরণ করেছে। তাদের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে আমরাও লড়াই করেছি। আমাদের এই জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। কেউ যেন ফাঁকতালে ঢুকে এই ঐক্য নষ্ট না করতে পারে। এজন্য আপামর ছাত্র-জনতাকে এবং সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে।

জামায়াত আমির বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে  সর্বত্র কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমাদের বৈধ অফিসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের দলকে শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছিলা। যারা এই বাংলার জমি থেকে ইসলামী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরকে চিরতরে নির্মূল করতে চেয়েছিল, মহান রাব্বুল আলামিন আজ তাদের নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, যশোর ঐতিহ্যবাহী এবং আন্দোলন-সংগ্রামের এলাকা। সুদীর্ঘ সংগ্রামের এলাকা। এই এলাকা থেকে সর্বপ্রথম একটি দেশের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ৯ম ডিভিশনের সেক্টরের কামান্ডার মেজর এম এ জলিল সঙ্গীদের নিয়ে লুটেরাদের বিরুদ্ধে প্রথম আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তাই এই যশোরকে আমরা অন্য উচ্চতায় দেখি। এরপর দ্বিতীয় পথসভা করেন যশোর বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছা বাজার এলাকায়। সব শেষ তিনি পথসভায় বক্তব্য রাখেন শার্শা উপজেলার নাভারণ সাতক্ষীরা মোড়ে। সভা শেষে রাতেই তিনি রওয়ানা দেন সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে।

পথসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ফারুক হাসান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, মোবারক হোসেন, যশোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাবিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, বেনাপোল পৌর জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইউছুপ আলী প্রমুখ।