৬ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ৩৫৭ রান করতে হবে বাংলাদেশকে
ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট জিততে ম্যাচের বাকী দু’দিনে ৩৫৭ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। হাতে রয়েছে ৬ উইকেট। ভারতের ছুঁড়ে দেওয়া ৫১৫ রানের টার্গেটে তৃতীয় দিন শেষে ৪ উইকেটে ১৫৮ রান করেছে টাইগাররা। আলো স্বল্পতায় আগেভাগেই তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হয়। প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানের লিডের সাথে শুভমান গিল ও ঋসভ পান্তের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ২৮৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষনা করে ভারত। প্রথম ইনিংসে ভারত ৩৭৬ ও বাংলাদেশ ১৪৯ রান করেছিলো।
চেন্নাই টেস্টে দ্বিতীয় দিন শেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ৮১ রান করেছিলো ভারত। ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৩০৮ রানে এগিয়ে ছিলো টিম ইন্ডিয়া। শুভমান গিল ৩৩ ও উইকেটরক্ষক ঋসভ পান্ত ১২ রান নিয়ে খেলতে নামেন। দিনের সপ্তম ওভারে বাংলাদেশ স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন গিল। এরপর ইনিংসের ৪৪তম ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম অর্ধশতকের দেখা পান ২১ মাস পর বড় সংস্করনে খেলতে নামা পান্ত। হাফ-সেঞ্চুরির পরও নিজেদের ইনিংস বড় করেছেন গিল ও পান্ত। তবে ৪৯তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ব্যক্তিগত ৭২ রানে জীবন পান পান্ত।
জীবন পেয়ে ১২৪ বলে টেস্টে ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন পান্ত। শতকের পর মিরাজের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ১০৯ রানে সাজঘরে ফিরেন তিনি। ১২৮ বলের ইনিংসে ১৩টি চার ও ৪টি ছক্কা ছিলো। চতুর্থ উইকেটে গিলের সাথে ১৬৭ রানের জুটি গড়েন পান্ত। এরপর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন প্রথম ইনিংসে ৮ বলে শূন্যতে ফেরা গিল। গিলের সেঞ্চুরির কিছুক্ষণ পর লিড ৫শ পার হলে ৬৪ ওভারে ৪ উইকেটে ২৮৭ রানে ইনিংস ঘোষনা করে ভারত। এসময় ১০টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১৭৬ বলে ১১৯ রানে অপরাজিত থাকেন গিল। অন্যপ্রান্তে ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন রাহুল।
মিরাজ ২টি, তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা ১টি করে উইকেট নেন। ৫১৫ রানের বড় টার্গেট পায় বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৪১৮ রানের বেশি তাড়া করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড নেই। তারপরও ব্যাট হাতে দারুন সূচনা করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম। বিনা উইকেটে ৫৬ রান তুলে চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফেরার পর চতুর্থ ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে বাংলাদেশের। পেসার জসপ্রিত বুমরাহর বলে স্লিপে যশস্বী জয়সওয়ালের দারুন ক্যাচে বিদায় নেন ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৩ রান করা জাকির। দলীয় ৬২ রানে সতীর্থকে হারানোর কিছুক্ষণ পর সাজঘরে ফিরেন সাদমান। স্পিনার রবীচন্দ্রন অশি^নের বলে শর্ট মিড উইকেটে গিলের দারুন ক্যাচে আউট হন তিনি। ৩টি চারে ৩৫ রান করেন সাদমান।
তৃতীয় উইকেটে মোমিনুুল হকের সাথে ৩৮ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের রান ১শ পার করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। অশি^নের দ্বিতীয় উইকেটে ভাঙে মোমিনুল-শান্তর জুটি। অশি^নের দারুন ডেলিভারিতে ব্যক্তিগত ১৩ রানে বোল্ড হন মোমিনুল। নতুন ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে এসে ১টি করে চার-ছক্কায় সাবলীল ব্যাটিং শুরু করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু মোমিনুলের মত আনলাকি থার্টিনে থেমে যান মুশি। অশি^নের বলে মিড অনে মুশফিকের দারুন ক্যাচ নেন লোকেশ রাহুল। ১৩ রানের ইনিংস খেলার পথে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৫২০৫ রানের মালিক হন মুশফিক। ১৫১৯২ রান নিয়ে তালিকার দ্বিতীয়স্থানে আছেন তামিম ইকবাল।
১৪৬ রানে চতুর্থ উইকেট পতনের পর অশি^নকে ছক্কা মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত। ১০ ইনিংস পর টেস্টে ৫০ রানের কোটা স্পর্শ করলেন শান্ত। শান্তর হাফ-সেঞ্চুরির ৯ বল পর আলো স্বল্পতায় দিনের খেলার ইতি ঘটে। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬০ বলে ৫১ রানে অপরাজিত আছেন শান্ত। তার সাথে ৫ রানে অপরাজিত সাকিব। অশি^ন ৬৩ রানে ৩টি ও বুমরাহ ১৮ রানে ১ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর কার্ড : (তৃতীয় দিন শেষে)
ভারত প্রথম ইনিংস : ৩৭৬/১০, ৯১.২ ওভার (অশি^ন ১১৩, জাদেজা ৮৬, হাসান ৫/৮৩)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১৪৯/১০, ৪৭.১ ওভার (সাকিব ৩২, মিরাজ ২৭*, বুমরাহ ৪/৫০)।
ভারত দ্বিতীয় ইনিংস : ২৮৭/৪ ডি, ৬৪ ওভার (গিল ১১৯*, পান্থ ১০৯, মিরাজ ২/১০৩)।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ১৫৮/৪, ৩৭.২ ওভার (শান্ত ৫১*, সাদমান ৩৫, অশি^ন ৩/৬৩)।